Saturday, June 16, 2012

Rohingya's The Great Planing (2)

Original Bengali version is below;
রোহিঙ্গা জঙ্গিরা নতুন করে একজোট হচ্ছে
আবু তাহের, কক্সবাজার
বিভক্ত রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠনগুলো নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে। অস্ত্র কেনার জন্য তারা ৫০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), আরাকান মুভমেন্ট, আরাকান পিপলস ফ্রিডম পার্টি, আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (এআরএনও), হরকাতুল জিহাদসহ কয়েকটি সংগঠন এখন একটি গ্রুপে কাজ করার জন্য একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে। আরএসও প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ ইউনুছ, রোহিঙ্গা নেতা ড. ওয়াকার উদ্দিন, আবুল ফয়েজ জিলানী, নুরুল ইসলাম, সালামত উল্লাহ, মোহাম্মদ শফি উল্লাহ, নাজমুল আলমসহ শীর্ষ কয়েক নেতা সম্প্রতি সৌদি আরবের রিয়াদে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বিভক্ত রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে 'আরাকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন' (এআরইউ) নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে তৎপরতা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন সংগঠনটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ড. মোহাম্মদ ইউনুছ, আবুল ফয়েজ জিলানী ও নুরুল ইসলামকে। বৈঠকের পরপরই শীর্ষ নেতারা ৫০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহে নেমেছেন। এ টাকায় অস্ত্র কেনা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
রোহিঙ্গা জঙ্গিদের নতুন করে সংগঠিত করার জন্য শীর্ষ পর্যায়ের নেতা সালামত উল্লাহ গত মাসে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলার চুনতিতে অবস্থান করছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। অন্যদিকে নাজমুল আলম রিয়াদ থেকে চলে গেছেন ব্যাংকক। কক্সবাজার অঞ্চলে
নতুন করে সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আবু সিদ্দিক আরমানকে। এ ছাড়া রোহিঙ্গা জঙ্গিদের শীর্ষ আরও কয়েক নেতা এখন কক্সবাজারে রয়েছেন। রোহিঙ্গা জঙ্গি নুর মোহাম্মদকে ক'দিন আগে কক্সবাজারে দেখা গেছে।
সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠনগুলো কয়েক বছর ধরে আন্তঃকোন্দলে জড়িয়ে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে একটি সংগঠনের ব্যানারে এসে তারা তহবিল সংগ্রহে নেমেছে। মাদক চোরাচালান, আদম পাচার, অস্ত্র ব্যবসাসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসার সঙ্গেও তারা জড়িত হচ্ছে। গত সপ্তাহে কক্সবাজারের গর্জনিয়া এলাকা থেকে একটি একে-৪৭ রাইফেলসহ র‌্যাবের হাতে আটক হয়েছে নজরুল ইসলাম নামে এক অস্ত্র ব্যবসায়ী। আটক ব্যক্তি জানিয়েছে, অস্ত্রটি সে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের কাছ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় কিনে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করতে এসে র‌্যাবের ফাঁদে ধরা পড়ে।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, রোহিঙ্গা জঙ্গিরা বড় একটি তহবিল সংগ্রহ করছে এনজিও পরিচালনার নামে। কক্সবাজার ও বান্দরবানে 'মুসলিম এইড', 'করুনা', 'ইমাম মুসলিম', 'দারুল আনসার', 'সমন্বিত মানবিক উদ্যোগ' ইত্যাদি এনজিওর নামে তারা বিভিন্ন দেশ থেকে ২৫ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করেছে। হুন্ডির মাধ্যমে আনা এ অর্থের একটি অংশ এসব এনজিওর মাধ্যমে মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় খরচ হয়। অবশিষ্ট টাকা যায় জঙ্গি গোষ্ঠীর পকেটে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কক্সবাজার সদরের ঝিলংজার মুহুরিপাড়ার ইমাম মুসলিম ইসলামিক সেন্টার নামে একটি মাদ্রাসা জঙ্গিদের অর্থে পরিচালিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হাফেজ সালা উল ইসলাম আরএসওর সামরিক বিভাগের সমন্বয়কারী। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রোহিঙ্গা শীর্ষ জঙ্গি নেতাদের তৎপরতায় কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলায় কিছু মাদ্রাসা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও এনজিও সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে জঙ্গি তৎপরতা।
আরএসওর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সেক্রেটারি সালামত উল্লাহ কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকায় আদর্শ শিক্ষা নিকেতন নামে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে কাজ করছেন মোহাম্মদ জাবের ও নুর মোহাম্মদ নামে আরও দুই জঙ্গি। জাবের আরএসওর নির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নুর মোহাম্মদ সদস্য। সালামত উল্লাহ বর্তমানে এ মাদ্রাসার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
রোহিঙ্গা জঙ্গিরা তাদের নেটওয়ার্ক হিসেবে ব্যবহার করছে কক্সবাজারের দুটি শরণার্থী ক্যাম্পকে। আলী জোহার, হাজি ফজল, রফিক আহমদ, হাফেজ নয়ন, লালু ডাক্তার, শামসু মাঝি, হাফেজ জালাল, মাওলানা শফিউল্লাহ, নুরুল হক মাঝি, নুর মোহাম্মদ, আবদুল রশিদ, মোহাম্মদ সায়েদ, আবু কাদের, আবু ইয়াহিয়া, হামিদ, রুহুল আমিন, আবদুল্লাহ মোহাম্মদসহ অনেক জঙ্গি অবৈধভাবে ক্যাম্পে অবস্থান করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। সূত্র জানিয়েছে, জঙ্গিদের তিন শতাধিক সদস্য দেশের বিভিন্ন স্থানে মসজিদে ইমাম-মুয়াজ্জিন হিসেবেও কাজ করছেন। তাদের মধ্যে বেশ কিছু আফগান-ফেরত জঙ্গিও রয়েছেন।
কক্সবাজারের সহকারী পুলিশ সুপার ছত্রধর ত্রিপুরা জানান, সীমিত লোকজন নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ। শরণার্থী ক্যাম্প অত্যন্ত স্পর্শকাতর এলাকা। এখানে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নজরদারি রয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া পুলিশ ক্যাম্পে অভিযান পরিচালনা করে না। এ সুযোগ হয়তো রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা নিতে পারে।

No comments:

Post a Comment